প্রাচীনকাল থেকেই আমরা সৌন্দর্যচর্চার উপাদান হিসেবে বিভিন্ন এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করে আসছি। এসেনশিয়াল অয়েলের ঔষধিগুণ ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে, এছাড়াও চুল পড়া কমানো, চুলের গোড়া মজবুত করা আর নতুন চুল গজানোর জন্যও এটা দারুন ভাবে কাজে দেয়।ডার্মাটোলজিস্টরা বলেন স্কিন সংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় টনিক হিসেবে কাজ করে।
আজকের এই লেখায় আমরা জানবো এসেন্সিয়াল অয়েল ও এর উপকারিতা সম্পর্কে।
এসেনশিয়াল অয়েল কী?
ফুলের পাপড়ি, গাছের পাতা, কাণ্ড, শিকড়, মূল ইত্যাদির রস নিংড়ে যে তেল তৈরি হয়, তাই হল এসেন্সিয়াল অয়েল। এটি সুগন্ধি যুক্ত এবং কনসেনট্রেটেড অবস্থায় থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল আর অ্যান্টি- ইনফ্ল্যামেন্টরি উপাদান।
এই তেল এর আছে নানা প্রকারভেদ। যেমন-লেমন,পেপারমিন্ট, স্যান্ডেলউড , লেমনগ্রাস, ল্যাভেন্ডার, টি ট্রি, রোজমেরি অয়েল ইত্যাদি ।
এসেনশিয়াল অয়েল এর উপকারিতা-
ত্বকের যত্নে, চুলের যত্নে এমনকি মানসিকভাবে প্রশান্তি দিতে অ্যাসেনশিয়াল অয়েল কার্যকরী। আসুন জেনে নেই এই তেল এর ব্যবহারে আপনি কী কী উপকারিতা পাবেন-
১) ত্বকের বলিরেখা, দাগছোপ ও পিগমেন্টেশন দূর করে
২) একনি ও ব্রেক-আউট দূর করে ত্বক রাখে মসৃণ ও উজ্জ্বল
৩) চুলের খুশকি দূর করে চুল পড়া কমায়
৪) উকুন এর সমস্যা দূর করে
৫) চুলের গোড়া মজবুত করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে
৬) শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক দূর করে।
৭) মানসিক স্ট্রেস কমায় ।
এসেনশিয়াল অয়েল কিভাবে ব্যবহার করবেন–
এর উপকার পেতে হলে আপনাকে করতে হবে এর সঠিক ব্যবহার। কারণ সব ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল সবার জন্য উপযোগী নয়। তাই এর গুণাবলী সম্পর্কে জেনে ত্বকের ধরন এবং প্রয়োজন বুঝেই ব্যবহার করা জরুরি।
স্বাভাবিক ত্বকে – ল্যাভেন্ডার, জেরানিয়াম অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত ত্বকে- টি ট্রি, পেপারমিন্ট এসেন্সিয়াল অয়েল খুবই কার্যকর।
শুষ্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকে- ল্যাভেন্ডার, রোজ, জেসমিন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের যত্নে রোজমেরি ,ইলাং ইলাং, মিন্ট এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারের নিয়ম-
এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারের পূর্বে প্যাচ টেস্ট করে নিন। অর্থাৎ ত্বকের খুব অল্প অংশে খানিকটা তেল ব্যবহার করে ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করুন। যদি ওই অংশে কোনো সমস্যা দেখা দেয় তবে সেটা আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা এড়াতে ক্যারিয়ার অয়েল, গোসলের পানি কিংবা ময়েশ্চারাইজারের সাথে যোগ করে ব্যবহার করতে পারেন। আর চেষ্টা করুন প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করার। কারণ কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত তেলে রাসায়নিক উপাদান মেশানো থাকে যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।