টি ট্রি অয়েল এর ঔষধি গুনাগুন এর জন্য যুগ যুগ ধরে মানুষ এটি ব্যবহার করে আসছে। নেটিভ অস্ট্রেলিয়ানরা কাশি সারাতে এবং ত্বকের সমস্যা দূর করতে টি ট্রি পাতার নির্যাস থেকে তৈরিকৃত তেল ব্যবহার করে থাকে।
বর্তমানে সারা বিশ্বে এই তেলের চাহিদা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আসুন আমরা জেনে নেই টি ট্রি অয়েল কি এবং তার কার্যকারিতা।
টি ট্রি অয়েল কি?
ম্যালেলুকা অল্টারনিফোলিয়া নামক উদ্ভিদের পাতা থেকে টি ট্রি অয়েল তৈরী হয়। যা নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসে।
যদিও ম্যালেলুকা অল্টারনিফোলিয়া টি ট্রি নামে পরিচিত, তবে গ্রিন টি বা ব্ল্যাক টি এর সাথে একে গুলিয়ে ফেললে চলবে না।
এই তেল টি একপ্রকার এসেন্সিয়াল অয়েল যা ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়। শুধু ত্বক নয় চুল এবং নখের যত্নেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
টি ট্রি অয়েল ব্যবহার এর উপকারীতা
– এটি ত্বকের রুক্ষভাব দূর করার মাধ্যমে চুলকানি এবং ইরিটেশন থেকে মুক্তি দেয়।
ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করতে মশ্চারাইজার এর সাথে সামান্য পরিমাণ টি ট্রি অয়েল মিক্স করে ব্যবহার করতে পারেন।
– শুধু রুক্ষ শুষ্ক ত্বক নয়, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নেও ট্রি ট্রি অয়েলের কার্যকারিতা প্রশংসনীয়।
২০১৬ সালের একটি স্টাডি অনুযায়ী টি ট্রি অয়েল সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ত্বকের তৈলাক্ততা লক্ষণীয় মাত্রায় দূর করে।
– এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপার্টিস ত্বকের ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া ত্বকের লালচে ভাব এবং জ্বালাপোড়া দূর করতেও টি ট্রি অয়েলের ব্যবহার সমাদৃত।
– এটি ক্ষত এবং কাটাছেঁড়া সারাতে সাহায্য করে।
২০১৩ সালের একটি স্টাডি অনুযায়ী টি ট্রি অয়েল ক্ষতস্থানের জীবানু ধ্বংস করে দ্রুত ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
– একনি বা ব্রণের সমস্যা দূর করতে টি ট্রি অয়েলের ব্যবহার জনপ্রিয়। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান ব্রণ সারাতে সক্ষম।
তাছাড়া এটি ব্রণের কালচে দাগ দূর করে আপনাকে একটি পরিষ্কার এবং মসৃণ ত্বক দিতে পারে।
– হ্যান্ড স্যানিটাইজার হিসেবে টি ট্রি এর ব্যবহার খুবই কার্যকরী। এটি নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ই-কোলি সহ কিছু কমন ব্যাক্টেরিয়ার দূর করতে পারে বিধায় হ্যান্ড ওয়াশ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারে এই তেল ব্যবহার করা হয়।
– ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন ঘাম ব্যাক্টেরিয়ার সাথে মিশে শরীরে যেই দুর্গন্ধ তৈরি করে তা দূর করতে টি ট্রি তেল ব্যবহার করা হয়। যে কারণে একে “ন্যাচারাল ডিওডোরেন্ট” বলা হয়।
– কেমিক্যাল ফ্রি মাউথওয়াশ হিসেবে এই তেল এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। রিসার্চ এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে এটি দাঁতের ক্ষয় এবং মুখের দুর্গন্ধ এড়াতে সক্ষম।
– শুধু তাই নয় খুশকি দূর করতেও এটি সফলভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সেইসাথে ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধি করার মাধ্যমে চুল গজাতেও সাহায্য করে।
টি ট্রি অয়েল ব্যবহার এর নিয়ম
বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যা দূর করার মাধ্যমে এটি ত্বকের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
তবে এটি ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না।
এর সাথে অলিভ অয়েল নারিকেল তেল অথবা আলমন্ড অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়।
তবে ত্বকে ব্যবহার করার পূর্বে প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে।
অর্থাৎ দুই এক ফোটা তেল হাতের চামড়ায় অথবা ঘাড়ের পাশে এপ্লাই করে ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
যদি এর মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না দেয় তাহলে আপনি নিশ্চিন্তে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
তবে প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এতি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।