এক্সফোলিয়েশন মাধ্যমে ত্বকের উপরের স্তরের এই মৃত কোষ এবং ময়লা দূর হয়। যার ফলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে। অর্থাৎ ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষ দূর করার এই পদ্ধতিকেই এক্সফোলিয়েশন বলে। 

আমাদের ত্বকে যেসব কোষ থাকে তাদের আয়ুস্কাল হলো 28 দিন। ত্বকে ডার্মিস, এপিডার্মিস এবং সার্ফেস স্তর রয়েছে। ডার্মিস থেকে সেলগুলোর সার্ফেসে আসার জন্য ২৮ দিন সময় লাগে। এভাবেই ভেতরের স্তর থেকে নতুন কোষ উপরের স্তরে আসে এবং উপরের স্তরের মৃত কোষ গুলো ঝরে পড়ে।

তাই আপনার ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষগুলো পুরোপুরি দূর হয়েছে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে। কারণ মৃত কোষগুলো পুরোপুরি রিমুভ না হলে তা জমে জমে লোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে  যেতে পারে। যার ফলে দেখা দিতে পারে ব্রন, একনি, ব্রেক আউট সহ নানা ধরনের ত্বকের সমস্যা। 

এক্সফোলিয়েশন কেনো করবো?

আমরা অনেকেই এক্সফোলিয়েশন এর উপকারী দিকগুলো সম্বন্ধে জানি না। ফলে আমাদের স্কিন কেয়ার রুটিনে এই গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি অন্তর্ভুক্ত করি না। তাই আমি আপনাদের জানাবো ত্বকের জন্য  এক্সফোলিয়েশন ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। চলুন জেনে নিই এক্সফোলিয়েশন আমাদের ত্বকে কি কি কাজ করে –

১. লোমকূপ উন্মুক্তকরণ: ত্বকের অতিরিক্ত মৃত কোষ এবং ময়লা দূর করে লোমকূপ উন্মুক্ত করে।

২. ব্রণ থেকে মুক্তি: লোমকূপ উন্মুক্ত হওয়ার ফলে ত্বকে উৎপন্ন তেল এবং ঘাম সহজেই বেড়িয়ে যেতে পারে। যার ফলে হোয়াইহেডস, ব্ল্যাকহেডস এবং ব্রণসহ নানান ধরনের স্কিন প্রবলেম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৩. স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের পথ সুগম করে দেওয়া: লোমকূপ উন্মুক্ত থাকার কারণে যেকোনো স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট খুব সহজেই বিনা বাঁধায় ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে এবং ঠিকভাবে কাজ করতে পারে। 

৪. স্কিন টোন বজায় রাখা: ময়লা এবং মৃত কোষ আমাদের ত্বকের উপরের স্তরে যে আবরণ তৈরি করে তাতে ত্বক কালচে এবং প্রাণহীন দেখায়। নিয়মিত এক্সফোলিয়েট এর দ্বারা ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়, ফলে ত্বকের কালচে ভাব দূর হয়ে ত্বককে আরো উজ্জ্বল এবং মসৃণ দেখায়।

৫. অয়েল/সেবাম নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত এক্সফোলিয়েট এর ফলে ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন ঠিকমতো হয়। ফলে আমাদের সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকেও পর্যাপ্ত এবং নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে সেবাম উৎপন্ন হয়।

৬. কোলাজেন সিনথেসিস: কোলাজেন, যা আমাদের ত্বকের দৃঢ়তা এবং ইলাস্টিসিটি বজায় রাখে। রেগুলার এক্সফোলিয়েশন এই কোলাজেন সিনথেসিস কে স্টিম্যুলেট করে। যার ফলে ত্বকের গঠণ, দৃঢ়তা এবং কাঠিন্য বজায় থাকে। একই সাথে ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখতেও সাহায্য করে।

এক্সফোলিয়েশন করার নিয়ম

যাদের ত্বক একটু অয়েলি এবং ব্রণপ্রবণ ত্বকের ক্ষেত্রে একদিন পর পর এক্সফোলিয়েট করা উচিত। অন্যান্য সকল ধরনের ত্বকের জন্য সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন এক্সফোলিয়েট করাই যথেষ্ট।

তবে মনে রাখতে হবে, বডি স্ক্রাবার দিয়ে কখনোই মুখ স্ক্রাব করা যাবে না। এতে করে মূখের কোষ  ড্যামেজ হয়ে যায়। কারণ আমাদের ফেইসের ত্বক শরীরের ত্বকের তুলনায় ডেলিকেট হয়। বডি স্ক্রাবার তুলনামূলক কঠিন হয়।